কেমন আছেন সবাই 
কোনো সংক্রমণ কিংবা প্রদাহের কারণে ফেলোপিয়ান টিউব যদি আংশিক বা পুরোপুরিভাবে ব্লক হয়ে যায়।
পেলভিক এরিয়া কিংবা ফেলোপিয়ান টিউবে যদি আগে কোনো অপারেশান করা হয়।
জন্মগত কোনো ত্রুটির কারণেও ফেলোপিয়ান টিউব এর আকার স্বাভাবিক এর চেয়ে ভিন্ন হতে পারে। এবং ফলস্বরূপ টিউবাল প্রেগন্যান্সি হবার আশংকা থাকে।
পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ বা PID থাকলে।
কোনো যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হলে। যেমন, গনোরিয়া।
মায়ের বয়স ৩৫ এর বেশি হলে।
আগের একটোপিক প্রেগন্যান্সির রেকর্ড থাকলে।
পেলভিক এরিয়া বা তলপেটে কোনো অপারেশান করা থাকলে।
আগের গর্ভপাত এর রেকর্ড থাকলে।
অতিরিক্ত ধূমপান
ফার্টিলিটি এর কোনো চিকিৎসা নিলে কিংবা ঔষধ গ্রহণ করলে।
একটপিক প্রেগন্যান্সি হলে প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সেরকম কোনো লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
রক্তক্ষরণ হতে পারে যা কিছুটা পিরিয়ড এর মত বা তার কাছাকাছি হবে।
তলপেট এবং পেলভিক এরিয়া তে প্রচন্ড ব্যাথা হতে পারে। এই ব্যাথা ঘাড় এবং কাঁধেও অনুভূত হতে পারে।
শরীর খুব দুর্বল এবং মাথা ঝিমঝিম করতে পারে।
একটপিক প্রেগন্যান্সি সনাক্ত করার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের সাহায্য লাগবে। চিকিৎসক প্রথমে রোগীর তলপেট, পেলভিক এরিয়া পরীক্ষা করে থাকেন। এরপর আল্ট্রাসাউন্ড করে থাকেন। যাতে জরায়ু তে কোনো বাড়ন্ত ভ্রূণ এর উপস্থিতি আছে কিনা চেক করে দেখা হয়। hCG(human chorionic gonadotropin) হরমোন এর মাত্রা ও পরীক্ষা করে দেখা হয়। কারণ আশানুরূপ এর তুলনায় কম hCG হরমোন ও একটপিক প্রেগন্যান্সির কারণে হতে পারে। এছাড়া রক্তে প্রজেস্টেরনের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। প্রয়োজনের তুলনায় কম প্রোজেস্টেরন ও একটপিক প্রেগন্যান্সির চিহ্ন হতে পারে।
একটপিক প্রেগন্যান্সি তে দুই ধরনের চিকিৎসা আছে। এক, ঔষধ গ্রহণ। দুই, অপারেশান।
চিকিৎসক রোগীকে methotrexate মেডিসিন গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন। এই ঔষধ ফেলোপিয়ান টিউবে বাড়ন্ত ভ্রূণের বৃদ্ধি বন্ধ করে দিবে। এবং এটি একসময় শরীরের সাথে মিশে যাবে। এতে ফেলোপিয়ান টিউবের কোনো ক্ষতি হবেনা।
অন্য উপায় হল ল্যাপারোস্কোপি(Laparoscopy) করা। এই প্রক্রিয়ায় অপারেশানের মাধ্যমে ফেলোপিয়ান টিউব থেকে ভ্রূণ কে অপসারণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় নাভির কাছাকাছি জায়গায় খুব ছোট করে একটা অংশ কেটে যন্ত্রপাতির সাহায্যে ভ্রূণ কে অপসারণ করা হয়। এতে ছোট একটা ক্যামেরা ও ব্যবহার করা হয় ভেতরের অবস্থা দেখার জন্য। এবং এটিই সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি একটপিক প্রেগন্যান্সি অপসারণের জন্য। এতে ভ্রূণ এর বৃদ্ধির পরিমাণ এবং ফেলোপিয়ান টিউব এর অবস্থার উপর ভিত্তি করে টিউব এর অংশবিশেষ কিংবা পুরো টিউব ও অনেক সময় অপসারণ করতে হতে পারে।
একবার একটপিক প্রেগন্যান্সি ধরা পড়লে রোগী ভবিষ্যৎ এ আবার গর্ভধারণ করতে পারবে কিনা?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটপিক প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ার পর ভবিষ্যতে সফল গর্ভধারণ সম্ভব। তবে এটি নির্ভর করে রোগী যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা নিয়েছিল কিনা এবং রোগীর ফেলোপিয়ান টিউব এর অবস্থার উপর। যদি এমন হয় যে, রোগীর কোনো একটা ফেলোপিয়ান টিউব বাদ দিতে হয়েছে কিংবা দুইটা টিউব ই কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তখন গর্ভধারণ কঠিন হয়ে পড়ে। এবং একবার একটপিক প্রেগন্যান্সি হলে এটা পরে আবার হবার সম্ভাবনা ও বেড়ে যায়।
সুতরাং গর্ভধারণ করার পর উপরের যে কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ডা.মনিরা ইয়াসমিন
ডি.এইচ.এম.এস.ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঢাকা



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন