সোহেল রানা, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : দেশের উত্তরাঞ্চলের ধান-চালের রাজ্য হিসেবে খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় গত বোরো মৌসুমের ন্যায় আমন মৌসুমেও ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য অধিদফতর। কৃষকদের কাছ থেকে কিনতে পারেনি এক মণ ধানও। বাজারে বেশি দাম পাওয়ায় গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহী নন কৃষক। ¯’ানীয় হাট-বাজারে ধান বিক্রি করে অধিক লাভবান হ”েছ তারা (কৃষক)। তেমনি বাড়তি দামে ধান ক্রয় করায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করছে না মিলাররা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের নেই কোন তৎপরতা।
সংগ্রহ ব্যর্থ হওয়ার কারণ হিসেবে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ¯’ানীয় বাজারে ধানের দাম বেশি, মিলারদের অসহযোগিতা ও দাম বৃদ্ধিকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে কৃষকরা বলছে, বাজারে ধান বিক্রি জটিলতামুক্ত। সরকারি গুদাম ও বাজারের দামের পার্থক্য ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
মহাদেবপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ নভেম্বর মহাদেবপুর সদর খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করে সংগ্রহ কমিটি। একই সাথে মহিষবাথান ও মাতাজিহাট খাদ্য গুদামে সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহের শেষ সময় ছিলো ২৮ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। আমন মৌসুমে কৃষকের নিকট থেকে ১ হাজার ৫৮৫ মেট্রিকটন ধান, ১৩ হাজার ৫৮৯ মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল এবং ১ হাজার ৬৭১ মেট্রিকটন আতব চাল সংগ্রহের জন্য ৬০ জন মিলারের সাথে চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সরবরাহের কথা থাকলেও সিদ্ধ চাল মাত্র ৭৭৯ দশমিক ৭৯০ মেট্রিকটন সরবরাহ করেছে মিলাররা। ধান ও আতপ চাল এক মণও সংগ্রহ করা যায়নি।
উপজেলার তাতারপুর গ্রামের কৃষক তারেক, হোসেন আলী ও নাটশাল গ্রামের কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার ১ হাজার ৪০ টাকা মণ দরে ধান কিনলেও ¯’ানীয় বাজারে প্রকারভেদে প্রতিমণ ধান ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা দামে বিক্রি হ”েছ। খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে শুকানো, ফ্যানিং করা, ব্যাংক একাউন্ট খোলা, ময়েশ্চারসহ নানা রকম ঝামেলা পোহাতে হয়। ধান দেওয়ার পরও টাকা উঠাতে গিয়ে ধাপে ধাপে ঘুষ দিতে হয়। আড়ৎদারদের নিকট ঝামেলা ছাড়াই বিক্রি করা যায়। তাই খাদ্য গুদামে ধান না দিয়ে তারা বাজারে বিক্রি করছেন।’
উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বাড়তি দামে ধান ক্রয় করায় সরকারি মূল্যে চাল দিলে মিলারদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হ”েছ। ব্যবসা ভালো না হওয়ায় অনেক মিলার দেওলিয়া হয়ে গেছে।’
মহাদেবপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শওকত জামিল বলেন, ‘বর্তমান ধানের মূল্য ‘কৃষক সহায়ক মূল্য’। বাজারে ধানের দাম বেশ ভালো থাকায় তারা সরকারি গুদামে ধান দি”েছ না। ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার প্রধান ও একমাত্র কারণ দামবৃদ্ধি।’
শুধু আমন মৌসুমেই নয়, গত বোরো মৌসুমেও (২০১৯-২০) ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হয় খাদ্য অধিদফতর। সে সময় চাল ও ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে মিলাররা সরকারি গুদামে চাল দিতে অস্বীকার করায় কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি।#
মো. সোহেল রানা, মহাদেবপুর-নওগাঁ
বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১
Home
Unlabelled
মহাদেবপুরে ধান-চাল সংগ্রহে আবারও ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য অধিদফতর
মহাদেবপুরে ধান-চাল সংগ্রহে আবারও ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য অধিদফতর
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Post Top Ad
Your Ad Spot
বিস্তারিত
সত্যের পথে আমরা সবসময়। আমরা চায় জনগণের কথা তুলে ধরতে, এবং সত্যের হয়ে কাজ করতে। আমাদের এই নিউজ আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যয় সবার কাছে শেয়ার করবেন, আর কোনো কিছু জানার থাকলে অবশ্যয় আমাদের অফিসিয়াল পেজ অথবা ইমেইল করতে পারবেন।


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন